Magic Lanthon

               

রীতা জান্নাত

প্রকাশিত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১২:০০ মিনিট

অন্যকে জানাতে পারেন:

রাষ্ট্র বনাম চলচ্চিত্র

মুশতাক আর বাখতাশ-এ তফাৎ নাই রে ভাই

রীতা জান্নাত



শিল্পীর চোখে শিল্পের ভাষা

যে মদ আমি পানই করিনি

তার স্বাদ কিভাবে তোমার মতো হয়।

কত কত দুখিকথা

কাপের তলানিতে জমে আছে

আমার সামনের

দেয়ালের মানচিত্রটি বহন করে

কত ব্যথা

মানচিত্রে একটি সমুদ্র আছে

যা গতিহীন ঢেউহীন আর নির্জীব।

তুমি ছাড়া

এখানের দ্বীপটিও বাঁকা দুঃখের মতো

যা এই সাগরে উড়ে পড়েছে

এবং আমি সেখানে

একটি লুকানো আলপিনের মতো বসে তোমাকে ভাবছি প্রিয়তমা।


শিল্পীমনে থাকে দ্বন্দ্ব, সেই দ্বন্দ্ব সৃষ্টির; আর থাকে আত্মাভিমান, সেটা শিল্পীর বড়ো সম্পদও বটে। তাই হাজারো বাধাবিপত্তি, কন্টকাকীর্ণ পথ পেরিয়ে শেষ অবধি বেঁচে থাকে শিল্পীর শিল্পসত্তা। কারণ ‘সাহসী মানুষ ও ‘সাহসী সৃষ্টি অপরাজেয়। শিল্পী বেঁচে থাকে তার কবিতা, লেখনী, চিত্রকর্ম কিংবা নির্মাণের মধ্যে। সৃষ্টির এই নেশা শিল্পীকে সবসময় তাড়িয়ে বেড়ায়; অতৃপ্ত রাখে। সৃষ্টির এহেন নেশায় শিল্পী ছুটে যায় প্রকৃতির কাছে। প্রকৃতির নানা রসদ নিয়ে সমৃদ্ধ করে তার শিল্পভাণ্ডারকে। আবার কখনো জীবনদর্শনই হয়ে ওঠে শিল্প। সাহিত্য, কবিতা, চিত্রকর্ম, চলচ্চিত্র-প্রতিটি শিল্পকর্মে থাকে বাস্তবের চেয়ে বেশি কিছু। এতে উঠে আসে শিল্পীর চোখে দেখা রাষ্ট্র ও সমাজের ‘ভিন্নরূপ। আর এটা তুলে ধরতে প্রতিটি শিল্পমাধ্যমের নিজস্ব বৈশিষ্ট্যও থাকে।

ইরানের কবি, চলচ্চিত্রনির্মাতা বাখতাশ আবতিন-এর কবিতা সেই অতৃপ্ত, অপরাজেয় শিল্পের কথাই বলে। ‘কত কত দুখিকথা কাপের তলানিতে জমে আছে কিংবা ‘দেয়ালের মানচিত্রটি বহন করে কত ব্যথা যেনো স্বদেশের দুরবস্থা নিয়ে দুঃখ আর হতাশারই ভিন্ন রূপ। স্বদেশের ‘অচেনা সেই রূপের সঙ্গে চিরচেনা, সুখী জন্মভূমিটাকে কবি যেনো মেলাতে পারেন না। তাই ‘মানচিত্রে একটি সমুদ্র আছে, যা গতিহীন, ঢেউহীন নির্জীব কিংবা ‘তুমি ছাড়া এখানের দ্বীপটিও বাঁকা দুঃখের মতো বলে বাখতাশ যেনো গোটা রাষ্ট্রীয় সিস্টেমকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন। অন্যদিকে, রাষ্ট্র যখনই শিল্পের এ ভাষা বুঝতে পারে, তখনই চেষ্টা করে তা দমিয়ে দিতে। অথবা আপোস করতে বাধ্য করে। ব্যর্থ হলে সরাসরি আঘাত হানে শিল্প ও শিল্পীর ওপর। পৃথিবীর সবদেশের পরিস্থিতিই কমবেশি এমন। তবে শিল্পীরা কিন্তু রাষ্ট্রের এতো এতো নিয়মের সঙ্গে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানিয়ে চলতে পারে না বা পারেনি। উল্টো সাধারণ মানুষকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখাতে চেয়েছে সমাজ ও রাষ্ট্র্রকাঠামোর ফাঁকফোকরগুলো। অবশ্য রাষ্ট্রও থেমে থাকেনি। নানাভাবে বাধা দিয়েছে/দেয়। ফলে অনেককে বাখতাশের মতো জীবনও দিতে হয়!

রাষ্ট্র ও বাখতাশ

২০২২ খ্রিস্টাব্দের ৮ জানুয়ারি; ইরানি কবি ও চলচ্চিত্রনির্মাতা বাখতাশ আবতিনের মৃত্যু দিন। এর আগ পর্যন্ত বাখতাশ অনেকের কাছে ততোটা পরিচিত ছিলেন না। মৃত্যুর পর হঠাৎই বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে শুরু হয় লেখালেখি। আলোড়ন সৃষ্টি করে তার একটি আলোকচিত্র-কয়েদির পোশাকে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে বই পড়ছেন বাখতাশ; পায়ে লোহার বেড়ি পরানো। তাকে কারাগারে রাখা হয়েছিলো ইরানের জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে। অবশ্য বাখতাশ-ই একমাত্র নন, এ রকম বহু ঘটনাই ঘটেছে, ঘটছে ইরানের নির্মাতা, কবি, সাহিত্যিক ও সাংবাদিকের সঙ্গে। ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে নির্মাতা জাফর পানাহি এক সাক্ষাৎকারে জানান, সেই সময় ইরানের বেশিরভাগ সাংবাদিকই কারাগারে বন্দি। পরের বছর পানাহিকে কারাগারে পাঠানো হয় এবং জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগে ইরান সরকার তাকেও ছয় বছরের কারাদণ্ড দেয়। এবং ২০ বছর চিত্রনাট্য লেখা, চলচ্চিত্র নির্মাণ ও সাক্ষাৎকার দেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। একই সাজা দেওয়া হয় তার সহকারী ও নির্মাতা মোহাম্মদ রাসুলফকেও। তেমনই এক অভিযোগে ২০১৯-এর ১৫ মে বাখতাশ আবতিন ও ইরানি লেখক সমিতির দুই সদস্য কেভান বাজান (ঔপন্যাসিক ও সাংবাদিক) এবং রেজা খান্দান মাহাবাদীকে (লেখক ও সমালোচক) ছয় বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রচারণা, দুর্নীতি ও নারীদের গণিকাবৃত্তিতে উৎসাহিত করাসহ একাধিক অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে।

এখন প্রশ্ন ‘জাতীয় নিরাপত্তা বলতে ইরান সরকার ঠিক কী বোঝায়; কোন কর্মকাণ্ডগুলো জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে যায়? এই বিষয়গুলো একটু দেখে নেওয়া যাক। ইরানের নাগরিক অধিকার সনদের ২৮নং অনুচ্ছেদে মতপ্রকাশ ও বাকস্বাধীনতাকে নাগরিক অধিকার বলে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আবার সংবিধানের ২৩নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ব্যক্তির বিশ্বাসের তদন্ত নিষিদ্ধ এবং কেবল একটি নির্দিষ্ট বিশ্বাসে আস্থা রাখার জন্য কাউকে উত্ত্যক্ত করা বা কাঠগড়ায় তোলা যাবে না। এছাড়া ২৪নং অনুচ্ছেদ নিশ্চয়তা দিয়েছে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার; যদি সেটা ইসলামের নীতি বা জনগণের অধিকারের জন্য ক্ষতিকারক না হয় এই সাপেক্ষে। ৮নং অনুচ্ছেদ ইসলামিক নীতিকে একটি সার্বজনীন ও পারস্পরিক কর্তব্য হিসেবে ধরে সরকার ও জনগণকে পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণে অভ্যস্ত হওয়ার কথা বলা হয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিশোধের ভয় ছাড়াই জনগণকে সমালোচনা করার অধিকার দিয়েছে। অথচ বাখতাশ ও অন্যান্যদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা কিন্তু একেবারেই ভিন্ন কথা বলে। সংবিধানের ২৩ ও ২৮নং অনুচ্ছেদে যথাক্রমে ব্যক্তিগত বিশ্বাসের জন্য কাউকে তদন্ত না করা এবং বাকস্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দিলেও বাখতাশের ব্যক্তিগত বিশ্বাস ও বাকস্বাধীনতাকে খর্ব করেছে ইরান সরকার। এবং তার চেয়েও মর্মান্তিক ব্যাপার হলো ৮নং নীতির পুরো ব্যত্যয় ঘটেছে। কারণ বাখতাশের বিরুদ্ধে অন্যতম প্রধান অভিযোগ ছিলো ধারাবাহিকভাবে সরকারের সমালোচনা করা। অন্যদিকে, ২৪নং অনুচ্ছেদে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার কথা বলে আবার কৌশলে ‘ইসলামের নীতি বা জনগণের অধিকারের জন্য ক্ষতিকারক না হয় বলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে রাখা হয়েছে। মূলত সেই ফাঁদেই ফেলা হয় বাখতাশকে।

বাকস্বাধীনতার পক্ষে কয়েকটি নীতিমালা সত্ত্বেও ইরান যেনো পরস্পরবিরোধী এক চক্রে আটকে আছে। বাখতাশ বিষয়টা ব্যাখ্যা করতেন এভাবে-“‘আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার জন্য মিথ্যা অভিযোগ সাজানো হয়েছে। আমরা এমন এক দেশে বাস করি যেখানে নিরাপত্তা বাহিনী সবকিছুর সিদ্ধান্ত নেয়। আমাদের কষ্ট ভোগ করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।’” অর্থাৎ তথ্য ও মতপ্রকাশের অবাধ প্রবাহ রোধে গোয়েন্দা ও নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে জোট করে আদালত নাগরিক অধিকারকর্মী, লেখক, সাংবাদিক, শিল্পী ও বুদ্ধিজীবীদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আনছে। এমনকি তাদেরকে জামিনে মুক্তি এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু সৃষ্টিশীল এই মানুষগুলোর বিরুদ্ধে রাষ্ট্র এতো সরব কেনো! লেখকরা জামিন পাচ্ছে না অথচ প্রেসিডেন্টের সহোদর ফেরেদুন কিংবা মেহেদি হাশেমি আর্থিক অনিয়মের দায়ে দণ্ডিতের পরও মহামারির ছুতোই ফার্লো (সাময়িক মুক্তি) পেয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে ইরানি মানবাধিকারকর্মী শিরিন এবাদি যেমনটা বলেন, “‘তথাকথিত ইসলামিক দয়া শাসকদের দোসরদের জন্য প্রসারিত, সাধারণ মানুষ এসবের অন্তর্ভুক্ত নয়। বিশেষত যারা সরকারের ধ্বংসাত্মক নীতির সমালোচনা করে।’” অবশ্য এ কথা শুধু ইরানে নয়, গোটা পৃথিবীর সাধারণ মানুষের জন্যই প্রযোজ্য।

যা রটে তা কতোটা ঘটে!

১৯৭৪-এ ইরানের তেহরান প্রদেশের শহর-ই রেতে জন্মগ্রহণ এবং সেখানেই বেড়ে ওঠেন বাখতাশ। বাখতাশ আবতিন তার সাহিত্যিক ছদ্মনাম। বাবা-মার দেওয়া নাম ছিলো মেহেদি কাজেমি। ছোটো থেকেই কবিতার প্রতি বেশ ঝোঁক ছিলো বাখতাশের এবং মাধ্যমিকে পড়ার সময়ই তার কবিতা লেখার শুরু। উচ্চ মাধ্যমিক পাসের পর ৯০ দশকের শেষ দিকে তার পাঁচটি কবিতার বই প্রকাশ হয়। কবিতা ও সাহিত্যে আগ্রহ থেকেই একপর্যায়ে তিনি চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন। শুরুটা স্ক্রিপ্ট লেখা দিয়ে। এরপর অভিনয় করেন টেলিভিশনের জন্য নির্মিত একটি চলচ্চিত্রে। সঙ্গে চলতে থাকে বিভিন্ন বিষয়ে সমালোচনামূলক লেখালেখি। তার লেখনির বেশিরভাগই ছিলো ইরানের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সমস্যাকে ঘিরে। ফলে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। তিনি তার কবিতায় যেমন প্রেম আর দ্রোহের কথা বলেছেন, তেমনই দাঁড়িয়েছেন শোষণের বিরুদ্ধে। ফলে একে একে ইরানে নিষিদ্ধ হতে থাকে তার বই। যে কারণে তাকে হাঁটতে হয় একটু ভিন্ন পথে। শুরু করেন প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ। তার উল্লেখযোগ্য প্রামাণ্যচিত্রের মধ্যে রয়েছে লরিস চেকনাভারিয়ানকে (ইরানি আর্মেনিয়ান সুরকার ও কন্ডাক্টর) নিয়ে নির্মিত অক্টোবর ১৩, ১৯৩৭। যেখানে বাখতাশ কথা বলেন ইরানের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে। এরপর নির্মাণ করেন আনসুর; বিখ্যাত কমপোজার হোমায়ুন খোরাম-এর জীবনীভিত্তিক এই প্রামাণ্যচিত্রে ইরানের সেন্সরশিপ নিয়ে কথা বলেন তিনি। এছাড়াও তার উল্লেখযোগ্য প্রামাণ্যচিত্রের মধ্যে রয়েছে-দ্য সোলার ইক্লিপস (২০০৫), দ্য স্যান্ড জার (২০০৬), দ্য স্লিপ পেনিট্রেশন (২০০৭), মিকা (২০০৭), দ্য নিয়ার ড্রিম (২০০৮), পার্ক মার্ক (২০০৯), মরি ওয়ান্টস আ ওয়াইফ (২০১৩)। সবগুলো চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী-ই নিষিদ্ধ হয়েছে ইরানে। শুধু কি ইরানেই এই নিষেধাজ্ঞা? মৃত্যুর পরেও যেনো বাখতাশ সমান শক্তিশালী! যে কারণে অন্তর্জাল দুনিয়ায় তার কাজ খুঁজে পাওয়া যায় সামান্যই। নিষিদ্ধের পরও ইরানের অন্য দুই নির্মাতা জাফর পানাহি ও মোহাম্মদ রাসুলফ-এর কিছু কাজ অন্তত অন্তর্জালে পাওয়া যায়। বাখতাশ যেনো আরো ভয়ঙ্কর ইরান সরকারের কাছে! দিনকে দিন শিল্পের বিরুদ্ধে, চলচ্চিত্রের বিরুদ্ধে ইরান সরকারের এই দমন-পীড়ন যেনো বাড়ছেই।

যদিও এই ইরান সরকারই ইসলামি বিপ্লবোত্তর চলচ্চিত্রকে বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে দিতে নানা উদ্যোগ নিয়েছিলো। ইরানি চলচ্চিত্রকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরতে এসব উদ্যোগ ছিলো এক ধরনের জনসংযোগ ব্যবস্থারই অংশ। একদিকে চলচ্চিত্র উন্নয়নে করণীয় পদক্ষেপ নিয়েছে, অন্যদিকে চলচ্চিত্র নিষিদ্ধকরণ, নির্মাতাদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতন চলেছে। তার মানে রাষ্ট্রের সমস্যা চলচ্চিত্র নির্মাণ নিয়ে নয়, আধেয় নিয়ে, যা তাদের প্রতিকূলে যাচ্ছে। আর প্রতিকূল অবস্থাকে অনুকূলে আনতে এই নির্যাতনের পরিধি এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে, দীর্ঘদিন যাবৎ ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত থাকা একজন কারাগারে অসুস্থ পরিবেশে দুইবার কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়েও ন্যূনতম চিকিৎসা পাননি। অবশ্য এতে রাষ্ট্রের কিছু আসে যায় না! বাখতাশের চিকিৎসাব্যবস্থা প্রসঙ্গে বিভিন্ন সংগঠন, সংস্থা থেকে সরকার বরাবর চিঠি পাঠানো সত্ত্বেও তারা তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বাখতাশকে রাখা কারাগারটির নাম ছিলো এভিন। তেহরানে ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে এটি নির্মাণ করা হয়। এভিনকে বিচারের জন্য অপেক্ষমান অভিযুক্তদের আটককেন্দ্র বলা হলেও বাস্তবে ঘটে ভিন্ন ঘটনা। অনেক অভিযুক্তকে সেখানে সাজার পুরোটা সময়ই থাকতে হয়। কারাগারের পরিবেশ এতোটাই অস্বাস্থ্যকর যে, সেখানে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। আর কেউ আগে থেকে অসুস্থ থাকলে তো কোনো কথাই নেই! তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া সহজ হয়। স্পষ্টতই ছক কষে সাজানো পুরো প্রক্রিয়াটি। কারাগারের আশপাশে যাওয়ার ব্যাপারে রয়েছে কঠোর বিধিনিষেধ। এসব কারণে এভিন কারাগারকে অনেকেই ‘হেল অন আর্থ বলে অভিহিত করে। বিশ্বব্যাপী চতুর্থ সর্বোচ্চ সংখ্যক লেখক, সাংবাদিক, ব্লগার, শিল্পী, বুদ্ধিজীবী ও মানবাধিকারকর্মীসহ অন্যান্য রাজনৈতিক বন্দিদের এখানে রাখা হয়েছে। তাই হয়তো বাখতাশ তার কবিতায় বলেন,

Black means night

and a dark alley means

your bright voice after we say goodbye

whether I will be or not

every evening,

my dreams will

kiss you in that alley!

White means hospital

and the thin blades of the fan mean

the world spins around me

you are not here so I

could wash the feet of the night

and wrapped in a white blanket, I

pretend to be dead

কবিতার রূপকতায় দারুণভাবে ‘সাদা আর কালো রঙের এক কাব্যময়তা উঠে এসেছে। যেমনটা হাসপাতালে চিকিৎসক থেকে শুরু করে, নার্স, রোগী সবার পোশাক এমনকি বিছানার চাদর অবধি সাদা রঙের। অন্যদিকে কারাগারের জীবনটা কালো রঙের মতো মনে হয় বাখতাশের। জীবনের বেশিরভাগ সময় তার কেটেছে কারাগারে; আর শেষ সময়টুকু হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে। তবে কোন অপরাধে তিনি এমন জীবন পেলেন! কিংবা কোন ভুল সংশোধনের জন্য তাকে দীর্ঘসময় কারাগারে কাটাতে হলো-তা নিয়ে দ্বিধায় পড়েন বাখতাশ! মানুষের আচরণকে নিয়ন্ত্রণ ও সংশোধনের তাগিদে নির্মাণ করা হয়েছিলো কারাগার। জেরেমি বেন্থাম ১৭০০ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি সময়ে ‘প্যানোপটিকন নামে এক কারাগার ব্যবস্থার কথা তোলেন। তার মতে, আধুনিক বিশ্বে কারাগার হবে কর্তৃত্ব ও শৃঙ্খলার প্রতীক। তিনি কারাগারের যে ধারণা দেন সেখানে কেউ কর্তৃপক্ষকে চ্যালেঞ্জ করবে না; সবাই নজরদারির মধ্যে থাকবে। মিশেল ফুকো এর সমালোচনা করে যুক্তি দেন, কারাগার রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি নাগরিককে কর্তৃত্বের অভ্যন্তরীণ করে তোলে, যা প্রচলিত নিয়ম ও প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতার উৎস। তখন নাগরিক রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব মেনে নেয়, কারণ ততোক্ষণে সে কর্তৃত্বকে স্ব-আরোপিত (self-imposed) করে তুলেছে।

বাখতাশের মতো রাষ্ট্রের এই কর্তৃত্ববাদী ফাঁদ যারা বোঝে তাদের কাছে রাষ্ট্র আয়নার মতো হয়ে যায়। বোঝে বলেই রাষ্ট্রের সন্ত্রাস তৈরির প্রক্রিয়া, দমননীতি, বিভিন্ন আইনের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে লেখক, শিল্পী, বুদ্ধিজীবীরা অবিরত প্রশ্ন তোলে। আর রাষ্ট্রীয় রোষানলে তাদের জায়গা হয় ওই কারাগারেই। ইরানের কারাগারগুলোও তার ব্যতিক্রম নয়। যার প্রথম ও প্রধান উদ্দেশ্যই শাসনকার্যে বাধা হতে পারে এমন ব্যক্তিবর্গকে নিয়ন্ত্রণ ও শাস্তি দেওয়া। সেখানে রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী ও সরকারের সমালোচকদের নানাভাবে মগজ ধোলাইয়ের কাজ চলে; আর তাতে ব্যর্থ হলে চলে নির্যাতন। তাই বলে তো আর রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ থেমে নেই। পানাহি, রাসুলফ কিংবা বাখতাশকে ১০ বছর কেনো ৫০ বছর কারাগারে রাখলেও তারা হয়তো মানুষের পক্ষেই কথা বলবে। এ বিষয়ে পেন আমেরিকার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুজান নসেল-এর কথাগুলো প্রাসঙ্গিক-

বাখতাশ আবতিন, কেভান বাজান ও রেজা খান্দান মাহাবাদী সেই চেতনার মূর্ত প্রতীক, যা ‘পেন আমেরিকাতে আমাদের কাজকে আরো সৃজনশীল করে। তারা এমন লেখক যারা শুধু একটি পৃষ্ঠায় কিছু লেখা এবং চমৎকার ধারণা দেওয়ার জন্যই বিখ্যাত নয়। বরং নির্ভীকভাবে বেঁচে থাকার জন্য এবং স্বাধীন চিন্তা, শিল্প-সংস্কৃতি ও সৃজনশীলতার ভিত্তিকে শক্তিশালী করে, এমন স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায় অপরিসীম ত্যাগ স্বীকার করেছে। ইরানের লেখক সম্প্রদায়ের নেতৃত্ব গ্রহণের মাধ্যমে তারা অগণিত লেখক এবং চিন্তাবিদের জন্য আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করেছে। যাদের স্বাধীনভাবে চিন্তার সক্ষমতা, সাহিত্য অঙ্গনকে সমৃদ্ধ করার প্রচেষ্টা এবং সবচেয়ে বিপজ্জনক পরিস্থিতিকেও চ্যালেঞ্জের ক্ষমতা, মূলত তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার কারণেই সম্ভব হয়েছে। যা প্রমাণ করে তারা এখন আরো সংঘবদ্ধ হচ্ছে। তবে ইরানের লেখক সম্প্রদায়ের এই তিন সিংহ-যাদের মূল অস্ত্র মেধা ও বুদ্ধিবৃত্তিক শক্তি-তাদের নানাভাবে ক্ষতির চেষ্টা করেছে ইরান সরকার। সরকারের এমন আচরণ প্রমাণ করে, তাদের শাসনব্যবস্থা নৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। এবং নিজেদের সরকারকে টিকিয়ে রাখতে তারা এতোটাই ভীত-সন্ত্রস্ত যে, স্বাধীন চিন্তাধারাকে স্তব্ধ করার নিরর্থক প্রচেষ্টার আশ্রয় নিয়েছে।১০

আটক অবস্থায় মারা যাওয়া ইরানি শিল্পীদের মধ্যে বাখতাশ-ই প্রথম কেউ নয়। এর আগে জাহরা কাজেমি-ইরান ও কানাডিয়ান দ্বৈত নাগরিকত্বের ৫৪ বছর বয়সি আলোকচিত্রী-২০০৩ খ্রিস্টাব্দে কারাগারে বন্দি অবস্থায় মারা যান। ব্লগার ওমিদ্রেজা মিরসায়াফি ২০০৯-এ গ্রেপ্তারের ছয় সপ্তাহ পর মৃত্যুবরণ করেন কারাগারে। দীর্ঘদিন কারাগারে থেকে সংবাদ সংস্থা ‘ইরান-ই ফারদার সম্পাদক হোদা সাবের ৫২ বছর বয়সে বন্দি অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এছাড়া ২০১২-তে ব্লগার সাত্তার বেহেশতিও কারাগারেই মৃত্যুবরণ করেন। ইরানি লেখক ও প্রগতিশীল রাজনীতিবিদ আলি দস্তির বিরুদ্ধে ধর্মদ্রোহের অভিযোগ এনে আটক করে সরকার। এবং সেখানে এমনভাবে নির্যাতন করা হয় যে, তার উরুর হাড় ভেঙে যায়। শেষদিকে কারাগার থেকে ছাড়া পেলেও গৃহবন্দি অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এ তো গেলো ইরানের অবস্থা। একটু খতিয়ে দেখলে জানা যায়, এমন ঘটনা আরো অনেক দেশে ঘটেছে/ঘটছে। ভারতের তেলেঙ্গনা রাজ্যের ৭৯ বছর বয়সি কবি ভারভারা রাওকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিলো। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হত্যাচেষ্টার। তিনি সরকারের অব্যবস্থাপনা আর সচেতনতামূলক বিষয়ে নিয়মিতই লেখালেখি করছিলেন। পরে অবশ্য আন্দোলনের মুখে তাকে শর্তাধীন জামিন দিতে বাধ্য হয় সরকার। তুরস্কের ব্যান্ড দল ‘ইয়োরোম-এর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করে সরকার। গ্রেপ্তার হওয়া দলের দুজন সদস্য ইব্রাহিম গোকচেকে ও হেলিন বোলেক এরই প্রতিবাদে কারাবন্দি অবস্থাতেই অনশন শুরু করে। দুইশো ৮৮ দিন অনশনের পর ২০২০ খ্রিস্টাব্দে হেলিন বোলেক মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। মৃত্যুর পর তার শেষকৃত্যও যথাযথ নিয়ম মেনে করতে দেয়নি তুরস্ক সরকার।১১ ২০২১-এর মে মাসে মিয়ানমারের কবি খেত থি (Khet thi) জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে কারাগারে নির্মম নির্যাতনের পর তার যৌনাঙ্গ কেটে ফেলা হয়। পরে তিনি মারা যান। এই কবি লিখেছিলেন, ‘তারা মাথায় গুলি করে; কিন্তু তারা জানে না, বিপ্লব থাকে হৃদয়ে।১২

বাংলাদেশের লেখক মুশতাক আহমেদ-এর ক্ষেত্রে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে! ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে অব্যবস্থাপনা নিয়ে সরকারের সমালোচনা করলে, সরকারের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তাকে আটক করে সরকার।১৩ তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে সরকার ও রাষ্ট্রের ক্ষমতাশীলদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতেন, যেটা তার ফেইসবুক পেইজ দেখলেই স্পষ্ট হয়।১৪ অবশ্য পরে তার অনেক তথ্যই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে মুছে ফেলা হয়। মুশতাককে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে চলে অমানবিক নির্যাতন, একপর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে কারাগারেই মারা যান। এ প্রসঙ্গে গবেষক অধ্যাপক ড. ফাহমিদুল হক ফেইসবুকে তার এক পোস্টে লিখেছিলেন,

চৌধুরী নাফিজ সারাফাত একজন ব্যবসায়ী, ব্যাংক ‘খাওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত, আছে আর্থিক অন্যান্য খাতে দুর্নীতির অভিযোগ। তাকে নিয়ে কার্টুন করলেন কিশোর, ক্যাপশন মুশতাক আহমেদের। চৌধুরী সাহেব আবার পিএমস ম্যান। আর তাই মুশতাক আর কিশোর গ্রেফতার হন কুখ্যাত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে। নয় মাস ধরে কারাগারে পঁচেছেন। মুশতাকের ক্ষেত্রে ছয়বার জামিন নাকচ হয়েছে। মুশতাক পঁচতে পঁচতে মরেও গেলেন। এতে কিছু লোক বিক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তায় প্রতিবাদ করলো, পুলিশ দিয়ে তাদের পেটানো হলো, ছয়জনকে গ্রেপ্তার করানো হলো, একজনকে বাসা থেকে উঠিয়ে নেওয়া হলো। আর পিএম বললেন, কেউ অসুস্থ হয়ে মারা গেলে কী করার আছে?১৫

আরেকটি পোস্টে ফাহমিদুল লেখেন, ‘মুশতাক জেলে মারা গেছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে তাকে জেলে পাঠানো হয়েছিলো। তার অপরাধ ছিলো লেখালেখি করা, অন্য কিছু নয়। যুক্তরাষ্ট্রের ইলিয়ন স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আলী রিয়াজ তার ফেইসবুক পাতায় লিখেছিলেন এভাবে-‘“... মুশতাক কীভাবে মারা গেছেন তাঁর চেয়েও বড় বিষয় হচ্ছে তিনি রাষ্ট্রের হেফাজতে ছিলেন, তাঁর দায়িত্ব নিয়েছিলো সরকার-এই মৃত্যুর দায়-হত্যার দায় সরকারের ...।১৬ এই ঘটনা থেকে এটা পরিষ্কার, রাষ্ট্রের সমালোচনা কেউই সহ্য করেনি-কী সমাজতন্ত্র, কী ইসলামী শাসনতন্ত্র, কী গণতন্ত্র!

শিল্পী ও শিল্পের মৃত্যু নেই

রাষ্ট্রীয় কাঠামো/শাসনব্যবস্থা নিয়ে কথা বলার পরিসর অনেক বিস্তৃত; এ নিয়ে কথা হয়েছে/উঠেছে অনেক, ভবিষ্যতেও হবে। তারপরও কোনো কিছু থেমে থাকেনি। সারা পৃথিবীতে নির্যাতন-নিপীড়ন চলছেই। এতো কিছুর পরেও খুব করে জানতে ইচ্ছে হয়, এভাবে আর কতো? যুগে যুগে আর কতো মুশতাক ও বাখতাশরা বলি হবে মানুষের ধুয়া তুলে মানুষ সৃষ্ট নিয়মে? আবার উল্টোটাও ভাবি, বাখতাশ, খেত থি, আলি দস্তি, হেলিন বোলেক কিংবা মুশতাকরা তো শেষ হয়ে যায়নি, তাদেরকে শেষ করাও যায় না। গোটা পৃথিবীর মুক্তিকামী মানুষদের তারা নতুন করে ভাবতে শেখায়, শেখাবে। আর তাতেই হয়তো পৃথিবীর কোথাও না কোথাও নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়াবে নতুন কোনো বাখতাশ কিংবা মুশতাক।

 

লেখক : রীতা জান্নাত, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

jannatulru.mcj@gmail.com

https://www.facebook.com/profile.php?id=100010314337649

 

তথ্যসূত্র ও টীকা

১. ‘তোমার মতো শিরোনামে বাখতাশের এই কবিতাটি ভাষান্তর করেছেন ফরহাদ নাইয়া। দেখতে পারেন : https://cutt.ly/LHZYluD; retrieved on: 13.03.22.

২. পারভেজ, রুবেল; ‘সিনেমা সংশ্লিষ্ট লোকদের মুখোমুখি হওয়া সহজ হবে না, একথা সরকার জানত; ম্যাজিক লণ্ঠন; সম্পাদনা : কাজী মামুন হায়দার; রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, সংখ্যা ১, বর্ষ ১, জুলাই ২০১১, পৃ. ১৩৯।

৩. ‘রাষ্ট্রীয় রোষে ইরানি নির্মাতা বাকতাশের মৃত্যু; দেখুন : https://www.deshrupantor.com/specially/2022/01/14/339054; retrieved on: 20.03.22.

৪. প্রাগুক্ত; ‘রাষ্ট্রীয় রোষে ইরানি নির্মাতা বাকতাশের মৃত্যু

৫. প্রাগুক্ত; ‘রাষ্ট্রীয় রোষে ইরানি নির্মাতা বাকতাশের মৃত্যু

৬. পারভেজ, রুবেল; ‘দেশে দেশে ইলমাজ গুণে; ম্যাজিক লণ্ঠন; সম্পাদনা : কাজী মামুন হায়দার; রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, সংখ্যা ২, বর্ষ ১, জানুয়ারি ২০১২, পৃ. ১০২¬-১০৩।

৭. ÔBaktash Abtin, Keyvan Bajan, Reza Khandan MahabadiÕ; দেখুন : https://pen.org/advocacy-case/baktash-abtin-keyvan-bajan-reza-khandan-mahabadi/; retrieved on: 10.04.2022.

৮. প্যানোপটিকন : এটি কারাগারের বিশেষ ধরনের নকশা। আধুনিক রাষ্ট্রে যে কারাগার ব্যবস্থা চালু আছে তার শুরু হয়েছিলো জেরেমি বেন্থাম-এর এই নকশা দিয়ে। এটি এমন এক ধরনের নকশা যেখানে কারাগারের সব বন্দিদের অল্প কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষী দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব; কিন্তু বন্দিরা তা বুঝতে পারবে না।

 ৯. স্ব-আরোপিত : ধারণাটি মিশেল ফুকোর ক্ষমতা সম্পর্কিত আলোচনা থেকে নেওয়া। আধুনিক রাষ্ট্র এমন এক ব্যবস্থা তৈরি করে, যেখানে জনগণ তার ওপর থাকা কর্তৃত্বকে জেনে-বুঝে মেনে নেয়।

১০. প্রাগুক্ত; Baktash Abtin, Keyvan Bajan, Reza Khandan Mahabadi.

১১. ‘সন্ত্রাসবিরোধী ফুলেরা; দেখুন : https://cutt.ly/sHZTXzj; retrieved on: 22.04.2022.

১২. ÔBody of arrested Myanmar poet Khet Thi returned to family with organs missing; দেখুন :  https://cutt.ly/oHZULHT; retrieved on: 25.04.2022.

১৩. ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার লেখক মুশতাকের মৃত্যু কারাগারে, কিশোরও অসুস্থ; দেখুন : https://cutt.ly/GHZXnVa; retrieved on: 30.04.2022.

১৪. https://www.facebook.com/michelkumirthakur/about; retrieved on: 12.05.2022.

১৫. https://www.facebook.com/fahmidulhaq/posts/10157592174931556; retrieved on: 14.03.2022.

১৬. ‘কারাগারেই মৃত্যু হলো লেখক মুশতাক আহমেদের, প্রতিবাদ মিছিল; দেখুন : https://www.bbc.com/bengali/news-56205818; retrieved on: 21.03.2022.

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন